প্রস্তুতি- ওয়ার্ম আপ বা শরীর গরম ও বিশেষ কিছু ব্যায়ামের মাধ্যমে অ্যাথলেট শারীরিক ও মানসিকভাবে প্রস্তুতি নেবে।
নিয়মাবলি
ক. লাফ দেবার জায়গা থেকে ১৬-২০ ধাপ দৌড়ে এসে সুবিধামতো বাম বা ডান পায়ের উপর ভর করে টেক অফ বোর্ডের উপর থেকে লাফ দিতে হবে।
খ. টেক অফ বোর্ডের দৈর্ঘ্য ১.২১-১.২২ মিটার, প্রস্থ ২০ সে.মি. (২ মিলিমিটার কমবেশি হতে পারে), উচ্চতা ১০ সে.মি.। রং সাদা।
গ. অ্যাপ্রোচ রানের দ্রুতগতি বেশি দূরত্ব অতিক্রম করতে সাহায্য করে।
ঘ. উভয় পায়ের ওপর একই সাথে অবতরণ করা।
ঙ. মাটিতে অর্থাৎ জাম্পিং পিটে অবতরণ করার সময় হাঁটু 'দ' এর মতো ভাঁজ করে থাকবে যাতে থুতনি হাঁটুতে না লাগে। মাথা সামনে ঝুঁকানো থাকবে।
চ. জাম্পিং পিট- টেক অফ বোর্ড থেকে ল্যান্ডিং এরিয়ার শেষ প্রান্ত পর্যন্ত দৈর্ঘ্য ১০ মিটার। টেক অফ বোর্ড থেকে ল্যান্ডিং এরিয়ার আরম্ভ পর্যন্ত ১-৩ মিটার। প্রস্থ ২.৭৫-৩.০০ মিটার এবং গভীরতা ৩০ সেন্টিমিটার।
কলাকৌশল: দীর্ঘ লাফের মধ্যে সাধারণভাবে চারটি অংশ রয়েছে। প্রথম টেক অফ নেবার জন্য দৌড়, দ্বিতীয় টেক অফ, তৃতীয় শূন্যে অবস্থান এবং শেষে জাম্পিং পিটে অবতরণ।
দৌড়ে আসা (অ্যাপ্রোচ রান)-টেক অফ নেওয়ার জন্য দৌড় ও নির্ভুল পদক্ষেপের উপর লাফের কৃতকার্যতা বিশেষভাবে নির্ভর করে। সাধ্যমতো অতি দ্রুততার সাথে দৌড়ে টেক অফ বোর্ডের কাছে আসতে হবে। আগে থেকে নিজের পদক্ষেপ ঠিক করে নিতে হবে।
মাটি থেকে ওপরে উঠা (টেক অফ)- মাটি থেকে ওপরে ওঠার জন্য টেক অফ বোর্ডকে পায়ের পাতার সাহায্যে
(যে পা দিয়ে মাটি ছাড়া হবে) সজোরে ধাক্কা দিয়ে উপরে উঠতে হবে। ধাক্কা দেওয়ার সময় হাঁটুর সন্ধি সামান্য ভাঙা থাকবে। তারপর পা সম্পূর্ণ সোজা করে নিতে হবে এবং একই সাথে বিপরীত হাঁটু ভেঙে দুলিয়ে সামনে পূর্বে নেওয়া পায়ের সমান করতে হবে।
শূন্যে অবস্থান (ফ্লাইট)- দেহ উপরে ওঠাবার জন্য হাঁটু টাক করা ('দ' এর মতো), ঝাঁকুনি দিয়ে খুব জোরে পা ছোড়া (হিচ কিক), কোমর দুলিয়ে ও হাত জোরে সামনে দুলিয়ে জাম্পিং পিটে অবতরণ করতে হবে।
অবতরণ (ল্যান্ডিং)- পা জাম্পিং পিটে পড়ামাত্র শরীর সামনে ঝাঁকুনি দিয়ে গড়িয়ে সামনে চলে আসতে হবে।
গোলক নিক্ষেপকে ইংরেজিতে শটপুট বলে। প্রাচীনকালে পাথর নিক্ষেপের প্রচলন ছিল। পরবর্তীকালে এটা লৌহগোলক নিক্ষেপে পরিণত হয়েছে।
নিয়মাবলি
ক. গোলকের ওজন পুরুষের জন্য ৭.২৬ কেজি এবং মহিলাদের জন্য ৪ কেজি। ব্যাস যথাক্রমে ১১-১৩ সেন্টিমিটার ও ৯.৫-১১ সেন্টিমিটার।
খ. গোলক নিক্ষেপের বৃত্তের ব্যাস ২.১৩৫ মিটার। বৃত্তের মাঝ বরাবর বর্ধিত দাগ ৭৫ সেন্টিমিটার।
গ. শটপুটের ল্যান্ডিং অ্যাঙ্গেল ৩৪.৯২ ডিগ্রি।
ঘ. বৃত্তের ভিতর থেকে ৩৪.৯২° সেকটরের মধ্যে নিক্ষেপ করে গোলকটি ফেলতে হবে।
ঙ. প্রত্যেকে তিনটি করে নিক্ষেপের সুযোগ পাবে।
নিক্ষেপের কৌশল: শেখার সুবিধার জন্য কৌশলগুলো নিচে ধারাবাহিকভাবে বর্ণনা করা হলো:
১। গোলক ধরা
(ক) গোলক হাতের তালু দিয়ে না ধরে আঙ্গুলের গোড়াসহ সম্পূর্ণ দিয়ে ধরতে হবে।
(খ) বুড়ো ও কড়ে আঙুল দিয়ে বলের দুই পাশ ধরে রাখতে হবে, যাতে গড়িয়ে না পড়ে।
২। গোলক কাঁধের উপর রাখা
(ক) গোলকটি গলা ও কাঁধের মিলনস্থলে খাঁজের মধ্যে ঠেলে রাখতে হবে, যাতে গোলকের ভার রাখা যায়।
(খ) ডান হাতের কনুই ডান পাশে খানিকটা উঁচুতে রাখতে হবে।
৩। প্রারম্ভিক অবস্থান
(ক) যেদিকে গোলক ছুড়বে তার বিপরীত দিকে মুখ করে দাঁড়াতে হবে।
(খ) ডান পা সামনে বা বাম পায়ের পাতাকে পিছনে নিয়ে ডান পায়ের গোড়ালির কাছে রাখতে হবে।
৪। স্থান পরিবর্তন
(ক) কোমর থেকে উপরের শরীরটাকে সামনের দিকে ঝুঁকিয়ে দ্রুত বাম পা-কে পিছনে উপরের দিকে দুলিয়ে নিয়ে যেতে হবে।
(খ) ডান পায়ের গোড়ালি দিয়ে সঙ্গে সঙ্গে ধাক্কা দিয়ে সম্পূর্ণ শরীরটা পিছনের দিকে ঠেলে নিতে হবে।
(গ) এই অবস্থায় লাফানো উচিত নয়।
৫। নিক্ষেপের অবস্থান
(ক) বাম পায়ের হাঁটু না ভেঙে সোজা করে থামের (খুঁটির) মতো রাখতে হবে।
(খ) ডান পায়ের হাঁটু ভেঙে কোমর থেকে উপরের শরীরটাকে পিছনের দিকে ঘুরিয়ে দিতে হবে।
(গ) দৃষ্টি পিছনের দিকে রাখবে।
৬। গোলককে ঠেলে দেওয়ার ভঙ্গী
(ক) গোলক শূন্যে ঠেলে দেওয়ার সময় ডান হাতের কনুই কখনো নিচের দিকে নামাবে না।
(খ) গোলকটি আঙুল দিয়ে বাইরের দিকে প্রবল শক্তিতে ঠেলে দিতে হবে।
৭। গতিবেগ নিয়ন্ত্রণ
(ক) গোলক নিক্ষেপের পর সামনের দিকে ঝুঁকে যাওয়া শরীরের গতিকে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য পিছনের ডান পা কে সামনে নিয়ে হাঁটু ভেঙে দেহটাকে একটু নামিয়ে ভারসাম্য রক্ষা করতে হবে।
কাজ-১: গোলক ছোড়ার কৌশলগুলো মাঠে প্রদর্শন কর। |
Read more